আন্তর্জাতিক

সালমান কি মৃত ?

Related image

সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের দীর্ঘদিন জনসম্মুখে না আসার কারণে তার বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে ইরানের বেশকিছু গণমাধ্যম। গত মাসে এক ‘অভ্যুত্থান’ চেষ্টায় গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তিনি মারা গেছেন বলে এসব গণমাধ্যম ধারণা করছে।

তবে রাশিয়ার বার্তা সংস্থা স্পুটনিক অবশ্য জানিয়েছে, যে ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে সৌদি যুবরাজের সম্ভাব্য মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে তার সপ্তাহখানেক পরের এক অনুষ্ঠানে সালমানকে দেখা গেছে।

অন্যদিকে ইরানি খবরের কাগজ কায়হান বলছে, এপ্রিলের ২১ তারিখ রিয়াদের রাজপ্রাসাদে হওয়া অভ্যুত্থানচেষ্টার ঘটনায় সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের গায়ে অন্তত দুটি গুলি লেগেছে। এর পর থেকে মোহাম্মদকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।

একইসঙ্গে এপ্রিলের শেষ দিক থেকে সৌদি যুবরাজের নতুন কোনো আলোকচিত্র কিংবা ভিডিও প্রকাশিত হয়নি জানিয়ে একই শঙ্কা প্রকাশ করেছে প্রেস টিভিও। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী মাইক পম্পেওর এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে রিয়াদ সফরের সময়ও মোহাম্মদকে দেখা না যাওয়ায় সন্দেহ আরো তীব্র হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

ইরানি বার্তা সংস্থা ফারস জানিয়েছে, ‘সালমান এমন একজন ব্যক্তি যাকে প্রায়ই গণমাধ্যমে দেখা যেত, কিন্তু রিয়াদের ওই গোলাগুলির পর ২৭ দিন ধরে তাকে কোথাও দেখা যায়নি।’

গত এপ্রিলের ২১ তারিখ রিয়াদের রাজপ্রাসাদ থেকে তুমুল গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাওয়ার কথা জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। সম্ভাব্য কোনো অভ্যুত্থানচেষ্টার ফল ওই গোলাগুলি, এমনটাও ধারণা করেছিলেন অনেকেই। তবে রিয়াদের দাবি, প্রাসাদের খুব কাছ দিয়ে উড়ে যাওয়া একটি ড্রোন ভূপাতিত করতেই রক্ষীরা ওই গুলি ছুড়েছিল।

ঘটনার সময় সৌদি বাদশা সালমান প্রাসাদ ছেড়ে কিং খালিদ ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন বলে সৌদি বিশেষজ্ঞ আলি আল-আহাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে স্পুটনিক।

তবে গোলাগুলির ঘটনার পরেও মোহাম্মদ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছেন বলে দাবি অনেকের। প্রমাণ হিসেবে নানান ছবিও হাজির করছেন কেউ কেউ।

অন্যদিকে সৌদি ক্রাউন প্রিন্সকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইরানি গণমাধ্যমগুলোর উদ্বেগের মধ্যেই শুক্রবার মোহাম্মদের ব্যক্তিগত দপ্তরের পরিচালক বাদের আল-আসাকের টুইটারে সৌদি যুবরাজের সঙ্গে আবু ধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান, বাহরাইনের বাদশা বিন ইসা ও মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসির একটি গ্রুপ ছবি পোস্ট করেছেন।

প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রাচ্যে প্রভাব বাড়ানোকে কেন্দ্র করে সুন্নিপ্রধান সৌদি আরবের সঙ্গে শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরানের দ্বৈততা কয়েক দশকের। ইয়েমেন ও সিরিয়া যুদ্ধেও তাদের অবস্থান প্রতিপক্ষ শিবিরে। সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪২ জনের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে খুবই জনপ্রিয় শিয়া নেতা নিমর আল নিমরের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর ২০১৬-র জানুয়ারিতে তেহরান ও মাশহাদের সৌদি দূতাবাসে হওয়া হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে রিয়াদ।

Back to top button